যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষিদ্ধ (০৮) || মুখ ঢেকে সালাত আদায় করা || নিজকে লাঞ্ছনার সম্মুখীন করা || প্রশাসক গোষ্ঠীর কাউকে কিছু উপঢৌকন দেয়া ||
- মুখ ঢেকে সালাত আদায় করা
- মসজিদে কোন দন্ডবিধি প্রয়োগ করা
- ঔষধের জন্য ব্যাঙ হত্যা করা
- হাজীদের কোন হারানো জিনিস রাস্তা থেকে উঠিয়ে নেয়া
- প্রশাসক গোষ্ঠীর কাউকে কিছু উপঢৌকন দেয়া
- কুর’আন ও সুন্নাহ্ প্রদর্শিত সঠিক পথ ছেড়ে
- অনুমানের ভিত্তিতে ফজরের আযান দেয়া
- কেউ সালাম ছাড়াই কারোর ঘরে ঢুকার অনুমতি চাইলে
- নিজকে লাঞ্ছনার সম্মুখীন করা
- অন্য মহিলার গঠনাকৃতি নিজ স্বামীর নিকট বর্ণনা করা
মুখ ঢেকে সালাত আদায় করা
আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ السَّدَلِ فِيْ الصَّلاَةِ وَأَنْ يُغَطِّيَ الرَّجُلُ فَاهُ
‘‘রাসূল (সা.) মুখ ঢেকে এবং গায়ের চাদরখানা দু’ দিকে লটকিয়ে রেখে স্বালাত্ আদায় করতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৬৪৩)
মসজিদে কোন দন্ডবিধি প্রয়োগ করা
’আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আব্বাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ تُقَامُ الْـحُدُوْدُ فِيْ الْـمَسَاجِدِ
‘‘মসজিদে কোন দন্ডবিধি কায়েম করা যাবে না’’।[1]
’হাকীম বিন্ ’হিযাম (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُّسْتَقَادَ فِيْ الْـمَسْجِدِ ، وَأَنْ تُنْشَدَ فِيْهِ الْأَشْعَارُ ، وَأَنْ تُقَامَ فِيْهِ الْـحُدُوْدُ
‘‘রাসূল (সা.) মসজিদে কারোর থেকে প্রতিশোধ নিতে, কবিতা আবৃত্তি করতে ও দন্ডবিধি কায়েম করতে নিষেধ করেছেন’’।[2]
[1] (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ২৬৪৮)
[2] (আবু দাউদ, হাদীস ৪৪৯০)
ঔষধের জন্য ব্যাঙ হত্যা করা
আব্দুর রহমান বিন্ ’উসমান তাইমী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ قَتْلِ الضِّفْدَعِ لِلدَّوَاءِ
‘‘রাসূল (সা.) ঔষধের জন্য ব্যাঙ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
[1] (স’হী’হুল-জা’মি’, হাদীস ৬৯৭১)
হাজীদের কোন হারানো জিনিস রাস্তা থেকে উঠিয়ে নেয়া
আব্দুর রহমান বিন্ ’উসমান তাইমী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ لُقَطَةِ الْـحَاجِّ
‘‘রাসূল (সা.) হাজীদের হারানো কোন জিনিস (প্রচারের উদ্দেশ্য ছাড়া) রাস্তা থেকে উঠিয়ে নিতে নিষেধ করেছেন’’।[1]
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আববাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
وَلاَ يَلْتَقِطُ إِلاَّ مَنْ عَرَّفَهَا
‘‘মক্কার রাস্তা-ঘাটে পড়ে থাকা হারানো কোন জিনিস প্রচারের উদ্দেশ্য ছাড়া কেউ যেন উঠিয়ে না নেয়’’।[2]
[1] (স’হী’হুল-জা’মি’, হাদীস ৬৯৭৯)
[2] (মুসলিম, হাদীস ১৩৫৩)
প্রশাসক গোষ্ঠীর কাউকে কিছু উপঢৌকন দেয়া
’আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’আব্বাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
الْـهَدِيَّةُ إِلَى الْإِمَامِ غُلُوْلٌ
‘‘প্রশাসককে উপঢৌকন দেয়া (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) আত্মসাতের শামিল’’।[1]
[1] (স’হী’হুল-জা’মি’, হাদীস ৭০৫৪)
কুর’আন ও সুন্নাহ্ প্রদর্শিত সঠিক পথ ছেড়ে
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
وَأَنَّ هَٰذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ ۖ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَن سَبِيلِهِ ۚ ذَٰلِكُمْ وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
‘‘আর নিশ্চয়ই এ পথই আমার সরল ও সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করবে। এ ছাড়া অন্য কোন পথের অনুসরণ করো না। তা না করলে তোমরা একদা তাঁর সঠিক পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সর্বদা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে পারো’’। (আন্’আম : ১৫৩)
অনুমানের ভিত্তিতে ফজরের আযান দেয়া
বিলাল (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
لاَ تُؤَذِّنْ حَتَّى يَسْتَبِيْنَ لَكَ الْفَجْرُ هَكَذَا
‘‘ফজর তথা সুবহে সাদিক এ ভাবে (রাসূল (সা.) তখন তাঁর উভয় হাত দু’ দিকে সম্প্রসারণ করে হযরত বিলালকে দেখিয়েছেন) সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ফজরের আযান দিবে না’’।[1]
[1] (আবু দাউদ, হাদীস ৫৩৪)
কেউ সালাম ছাড়াই কারোর ঘরে ঢুকার অনুমতি চাইলে
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ تَأْذَنُوْا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأْ بِالسَّلاَمِ
‘‘যে ব্যক্তি সালাম ছাড়াই কারোর ঘরে ঢুকার অনুমতি চাইলো তাকে তোমরা ঢুকার অনুমতি দিবে না’’।[1]
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
السَّلاَمُ قَبْلَ السُّؤَالِ ؛ فَمَنْ بَدَأَكُمْ بِالسُّؤَالِ قَبْلَ السَّلاَمِ فَلاَ تُجِيْبُوْهُ
‘‘কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই তাকে সালাম দিতে হয়। সুতরাং কেউ তোমাদেরকে সালামের আগেই কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে তার উত্তর দিবে না’’।[2]
[1] (স’হী’হুল-জা’মি’, হাদীস ৭১৯০)
[2] (ইবনু ’আদি ৩০৩/২)
নিজকে লাঞ্ছনার সম্মুখীন করা
’হুযাইফাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ يَنْبَغِيْ لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُّذِلَّ نَفْسَهُ ، قَالُوْا : وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ ؟ قَالَ: يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيْقُ
‘‘কোন মু’মিনের জন্য উচিৎ হবে না নিজকে কোন ভাবে লাঞ্ছিত করা। সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ (হে আল্লাহ্’র রাসূল!) কিভাবে কেউ নিজকে লাঞ্ছিত করে? তিনি বললেনঃ কেউ নিজ সাধ্যাতীত কোন বিপদ স্বেচছায় নিজ কাঁধে উঠিয়ে নেয়া’’।[1]
কাউকে কোন শরীয়ত বিরোধী কাজ করতে দেখে তাকে উক্ত কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা না করে তা চোখ বুজে মেনে নেয়াও নিজকে লাঞ্ছিত করার শামিল।
আবু সা’ঈদ্ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন:
إِنَّ اللهَ لَيَسْأَلُ الْعَبْدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَقُـوْلَ : مَا مَنَعَكَ إِذْ رَأَيْتَ الْـمُنْكَرَ أَنْ تُنْكِـرَهُ ؟ فَإِذَا لَقَّنَ اللهُ عَبْدًا حُجَّتَهُ قَالَ : يَا رَبِّ ! رَجَوْتُكَ وَفَرِقْتُ مِنَ النَّاسِ
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাহ্কে কিয়ামতের দিন এ বলে প্রশ্ন করবেন যে, তুমি যখন তোমার সামনে অসৎ কাজ সংঘটিত হতে দেখলে তখন তুমি তাতে বাধা দিলে না কেন? যখন আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাহ্কে তার কৈফিয়ত দেয়ার সুযোগ দিবেন তখন সে বলবেঃ হে আমার প্রভু! আমি আপনার অনুগ্রহের আশা অবশ্যই করেছিলাম। তবে তখন মানব ভীতিই আমার মধ্যে বেশি কাজ করেছিলো’’।[2]
[1] (তিরমিযী, হাদীস ২২৫৪ ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৪০৮৮)
[2] (ইবনু মাজাহ্, হাদীস ৪০৮৯)
অন্য মহিলার গঠনাকৃতি নিজ স্বামীর নিকট বর্ণনা করা
আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্’ঊদ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) ইরশাদ করেন:
لاَ تُبَاشِرُ الْـمَرْأَةُ الْـمَرْأَةَ فَتَنْعَتُهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّهُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا
‘‘কোন মহিলা অন্য মহিলার সাথে মেলামেশার পর সে যেন উক্ত মহিলার গঠনাকৃতি নিজ স্বামীর নিকট এমনভাবে বর্ণনা না দেয় যেন সে (নিপুণ বর্ণনার দরুন) উক্ত মহিলাকে সরাসরিই দেখছে’’।[1]
[1] (বুখারী, হাদীস ৫২৪০, ৫২৪১)
একজন মুসলিম হিসেবে যে কাজগুলো আপনার জন্য নিষেধ- এর সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুনঃ
১ম পর্ব ২য় পর্ব ৩য় পর্ব ৪র্থ পর্ব ৫ম পর্ব ৬ষ্ট পর্ব ৭ম পর্ব ৮ম পর্ব ৯ম পর্ব ১০ম পর্ব ১১তম পর্ব ১২তম পর্ব ১৩তম পর্ব ১৪তম পর্ব ১৫তম পর্ব ১৬তম পর্ব ১৭তম পর্ব ১৮তম পর্ব ১৯তম পর্ব ২০ম পর্ব ২১তম পর্ব ২২তম পর্ব ২৩তম পর্ব ২৪তম পর্ব ২৫তম পর্ব ২৬তম পর্ব ২৭তম পর্ব ২৮তম পর্ব ২৯তম পর্ব ৩০ম পর্ব ৩১তম পর্ব ৩২তম পর্ব ৩৩তম পর্ব ৩৪ম পর্ব
************************************
সাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি ভাল লাগলে সত্য ও ন্যয়ের পথে অন্য ভাইনদেরকে দাওয়াতের নিয়তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে এবং দীন ও মানবতার সেবায় অংশ নিতে OUR ACTION PLAN বাটনে ক্লিক করুন।
মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url