প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর জীবনী [পর্ব- ৪২] || মহানবীর জীবনী ||





[পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:)। যাকে আল্লাহ সমস্ত মানুষের জন্য অশেষ রহমত স্বরূপ এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যে নবী সারা জীবন উম্মতের জন্য সংগ্রাম করেছেন, কাল রোজ হাশরের মাঠেও যিনি উম্মতের জন্যই পেরেশান থাকবেন; সেই প্রাণপ্রিয় নবীকে আমরা কতটুকু চিনি কতটুকু জানি। প্রিয় নবী (সা:) এর জীবনের পরতে পরতে রয়েছে আমাদের জন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা। যার জীবনী পড়লে নিজের অজান্তেই চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। সেই নবীর জীবনী কি আমরা সত্যিই জানি? আসুন, আরেকবার দেখে নেই “প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর জীবনী”। যে জীবনী পড়ে বদলে যেতে পারে আপনার আমার জীবন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রাণপ্রিয় নবীর (সা:) উম্মত হিসাবে কবুল করুন। আমিন।।]

খায়বর বিজয়ের পরবর্তি অভিযান ও যুদ্ধসমূহ এবং খায়বরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী

খায়বর বিজয়ের পর

খায়বর বিজয় সম্পন্ন করার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পার্শ্ববর্তী ইহূদী জনপদ ওয়াদিল ক্বোরা(وَادِي الْقُرَى) এবং তায়মা (تَيْمَاء)-এর দিকে মনোনিবেশ করলেন, যাতে এরা পরবর্তীতে মাথা চাড়া না দেয়। এদের সাথে আরবদের একটি দল গিয়ে মিলিত হয়েছিল।

(১) ওয়াদিল ক্বোরা জয়(فتح وادى القرى) : মুসলিম বাহিনী ওয়াদিল ক্বোরা উপস্থিত হ’লে ইহূদীরা তীর নিক্ষেপ শুরু করল। তাতে মিদ‘আম (مِدْعَم) নামক রাসূল (ছাঃ)-এর জনৈক গোলাম মৃত্যুবরণ করে। সাথীরা তাকে সম্ভাষণ জানিয়ে বলে ওঠেন, الْجَنَّةُ ‘তার জন্য জান্নাত’। তখন রাসূল (ছাঃ) রাগতঃস্বরে বললেন,كَلاَّ وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ إِنَّ الشَّمْلَةَ الَّتِى أَخَذَهَا يَوْمَ خَيْبَرَ مِنَ الْمَغَانِمِ، لَمْ تُصِبْهَا الْمَقَاسِمُ، لَتَشْتَعِلُ عَلَيْهِ نَارًا ‘কখনোই না। সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার জীবন, এই ব্যক্তি খায়বরের দিন গণীমত বণ্টনের পূর্বেই তা থেকে একটা চাদর নিয়েছিল। সে চাদর এখন তার উপরে অবশ্যই আগুন হয়ে জ্বলবে’। একথা শুনে কেউ জুতার একটি ফিতা বা দু’টি ফিতা যা গোপনে নিয়েছিল, সব এনে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে জমা দিল। রাসূল (ছাঃ) বললেন, এ ফিতা ছিল আগুনের’(شِرَاكٌ أَوْ شِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ)।[1]

এরপর ইহূদীদের নিকটে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ইসলামের দাওয়াত দিলেন। তারা যথারীতি দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করল। তাদের মধ্য হ’তে একজন এসে দ্বৈতযুদ্ধে আহবান করল। তখন রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষে যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম গিয়ে তাকে খতম করে দেন। এইভাবে তাদের ১১ জন পরপর নিহত হয়। প্রতিবারে দ্বৈতযুদ্ধের পূর্বে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে ইসলাম কবুলের আহবান জানাতেন। কিন্তু তারা অহংকার বশে বারবার তা প্রত্যাখ্যান করত। এভাবে একদিন গত হ’ল। পরদিন রাসূল (ছাঃ) আবার গিয়ে তাদের দাওয়াত দিলেন। তখন তারা আত্মসমর্পণ করে এবং বহু গণীমত হস্তগত হয়। যা ছাহাবীগণের মধ্যে বণ্টিত হয়। তবে জমি-জমা ও খেজুর বাগান ইহূদীদের নিকটে অর্ধাংশের বিনিময়ে রেখে দেওয়া হয়, যেমন খায়বরবাসীদের সাথে চুক্তি করা হয়েছিল।[2]

(২) তায়মা বিজয়(فتح تيماء) : খায়বর ও ওয়াদিল ক্বোরার ইহূদীদের শোচনীয় পরাজয়ের খবর জানতে পেরে তায়মার ইহূদীরা শক্তি প্রদর্শনের চিন্তা বাদ দিয়ে সরাসরি রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সন্ধিচুক্তি করে।[3] যার ভাষ্য ছিল নিম্নরূপ-هَذَا كِتَابٌ مِنْ مُحمدٍ رَسولِ اللهِ لِبَنِي غَادِيَا أنَّ لَهُمُ الذِّمَّةَ وَعَلَيْهِمُ الْجِزْيَةَ وَلا عَدَاءَ وَلا جَلاءَ اللَّيْلُ مَدٌّ وَالنَّهَارُ شَدٌّ ‘এ দলীল লিখিত হ’ল আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদের পক্ষ হ’তে বনু গাদিয়ার জন্য। তাদের জন্য রইল (আমাদের) যিম্মাদারী এবং তাদের উপরে রইল জিযিয়া। কোন শত্রুতা নয়, কোন বিতাড়ন নয়। তাদের রাত্রি ও দিন হবে নিরাপদ’। চুক্তিনামাটি লিপিবদ্ধ করেন খালেদ ইবনু সাঈদ (রাঃ)।[4] চুক্তির ভাষা ও বক্তব্য অতীব চমৎকার ও সারগর্ভ, যা অনন্য ও অভূতপূর্ব।

খালেদ বিন সা‘ঈদ ইবনুল ‘আছ উমুভী ছিলেন ৪র্থ অথবা ৫ম মুসলিম। যিনি স্বপ্নে দেখেন যে, তাঁর পিতা তাঁকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করছেন এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁকে দু’হাত ধরে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। এ স্বপ্ন দেখে পরদিন তিনি আবুবকরের নিকটে চলে আসেন এবং বলেন, মুহাম্মাদ অবশ্যই আল্লাহর রাসূল। অতঃপর তিনি ইসলাম কবুল করেন। এ খবর জানতে পেরে তাঁর পিতা তাঁর খানা-পিনা বন্ধ করে দেন এবং তাঁর ভাইদেরকে তাঁর সাথে কথাবার্তা নিষিদ্ধ করে দেন। ফলে তিনি স্ত্রীসহ হাবশায় হিজরত করেন। সেখান থেকে জা‘ফর বিন আবু ত্বালিবের সাথে খায়বরে এসে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে মিলিত হন। আবুবকর (রাঃ)-এর খেলাফতের শেষ দিকে আজনাদায়েন-এর যুদ্ধে তিনি শহীদ হন (আল-ইছাবাহ, খালেদ বিন সা‘ঈদ ক্রমিক ২১৬৯)।

[1]. বুখারী হা/৪২৩৪; মুসলিম হা/১১৫; মিশকাত হা/৩৯৯৭, জিহাদ অধ্যায়-১৯, অনুচ্ছেদ-৭।

[2]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩১৪; আল-বিদায়াহ ৪/২১৮; আর-রাহীক্ব ৩৭৮ পৃঃ।

[3]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩৭৪; আল-বিদায়াহ ৪/২১৮।

[4]. ইবনু সা‘দ ১/২১৩; তিনি চুক্তিনামাটি বিনা সনদে বর্ণনা করেছেন; আর-রাহীক্ব ৩৭৮-৭৯ পৃঃ।

খায়বর হতে মদীনায় প্রত্যাবর্তন

তায়মাবাসী ইহূদীদের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি সম্পাদনের পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পথিমধ্যে এক স্থানে শেষ রাত্রিতে যাত্রা বিরতি করেন ও বেলালকে পাহারায় নিযুক্ত করে বলেন,اكْلأْ لَنَا اللَّيْلَ ‘রাত্রিতে আমাদের দিকে খেয়াল রেখো (অর্থাৎ ফজরে জাগিয়ে দিয়ো)। কিন্তু বেলালের চোখেও ঘুম চেপে গেল। ফলে সকালের রোদ গায়ে লাগলেও কারু ঘুম ভাঙ্গেনি। রাসূল (ছাঃ)-ই সর্বপ্রথম ঘুম থেকে ওঠেন। অতঃপর ঐ উপত্যকা ছেড়ে কিছু দূর গিয়ে সবাইকে নিয়ে ফজর পড়েন। অতঃপর তিনি বলেন,مَنْ نَسِىَ الصَّلاَةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللهَ قَالَ (أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى) ‘যে ব্যক্তি ছালাত ভুলে যাবে, সে যেন স্মরণ হওয়ার পরে সেটা পড়ে। কেননা আল্লাহ বলেন, তোমরা আমার স্মরণে ছালাত কায়েম কর’ (ত্বোয়াহা ২০/১৪)।[1]

অতঃপর ৭ম হিজরীর ছফর মাসের শেষভাগে অথবা রবীউল আউয়াল মাসে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) মাসাধিককাল পর মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন।

[1]. মুসলিম হা/৬৮০ (৩০৯); মিশকাত হা/৬৮৪; ইবনু হিশাম ২/৩৪০।
 শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ -২৯ (العبر -২৯)
(১) ইসলাম ও ইসলামী খেলাফতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের দমন ও নির্মূল করা ইসলামের স্বার্থেই যরূরী।

(২) যত বড় শত্রুই হৌক প্রথমে তাকে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে। দাওয়াত কবুল না করলে এবং যুদ্ধে এগিয়ে এলেই কেবল তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যাবে।

(৩) যুগোপযোগী যুদ্ধাস্ত্র ও কলাকৌশল প্রয়োগ করা ইসলামী যুদ্ধনীতিতে সর্বতোভাবে সিদ্ধ।

(৪) শত্রুতা না করলে এবং অন্যান্য শর্তাদি পূরণ করলে অমুসলিমদের সাথে কোন যুদ্ধ নেই।

(৫) জাতীয় সম্পদ হ’তে খেয়ানত করা জাহান্নামের আগুন খরীদ করার শামিল। এমতাবস্থায় ইসলামী জিহাদে বাহ্যতঃ শহীদ হ’লেও সে ব্যক্তি জাহান্নামী হবে।

(৬) চূড়ান্ত বিজয় কেবল ঈমানদারগণের জন্যই নির্ধারিত, মুনাফিকদের জন্য নয়। সেকারণ খায়বর যুদ্ধে মুনাফিকদের যোগদান নিষিদ্ধ ছিল।

খায়বর পরবর্তী যুদ্ধসমূহ

গাযওয়া ওয়াদিল ক্বোরা

৭ম হিজরীর মুহাররম মাস। খায়বর যুদ্ধের পর রাসূল (ছাঃ) এখানকার ইহূদীদের প্রতি গমন করেন। দিনভর যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে রাসূল (ছাঃ)-এর একজন গোলাম এবং ইহূদী পক্ষে ১১ জন নিহত হয়। বিপুল গণীমত লাভ হয়। ইহূদীরা সন্ধি করে এবং চাষের জমিগুলি তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় উৎপন্ন ফসলের অর্ধাংশ দেওয়ার শর্তে, যেভাবে খায়বরে করা হয়েছিল। ফাদাক ও তায়মার ইহূদীরা বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে ও সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করে।[1]

সারিইয়া আবান বিন সাঈদ

৭ম হিজরীর ছফর মাস। মদীনার আশপাশের লুটেরা বেদুঈনদের ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আবান বিন সাঈদের নেতৃত্বে নাজদের দিকে এই অভিযান প্রেরিত হয় এবং যথাসময়ে তারা অভিযান সফল করে ফিরে আসেন এবং খায়বরে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে মিলিত হন।[2]

গাযওয়া যাতুর রিক্বা

৭ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাস। এই যুদ্ধে মদীনার আমীর নিযুক্ত হন আবু যার গিফারী (রাঃ)। মতান্তরে ওছমান বিন ‘আফফান (রাঃ)। ইবনু হিশাম, ইবনুল ক্বাইয়িমসহ প্রায় সকল জীবনীকার এই যুদ্ধকে ৪র্থ হিজরীর ঘটনা বলেছেন। কিন্তু আবু মূসা আশ‘আরী ও আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর অংশগ্রহণের কারণে সর্বাধিক ধারণা মতে এটি ৭ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে সংঘটিত হয়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়। কেননা তারা ৭ম হিজরীর মুহাররম-ছফর মাসে সংঘটিত খায়বর যুদ্ধের সময় মুসলমান হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খায়বরে সর্বপ্রথম সাক্ষাৎ করেন। এই যুদ্ধকে গাযওয়া নাজদ, গাযওয়া বনু মুহারিব ও বনু ছা‘লাবাহ বিন গাত্বফানও বলা হয়ে থাকে (সীরাহ ছহীহাহ ২/৪৬২)।

খন্দকের যুদ্ধে শত্রুদের তিনটি প্রধান পক্ষের দু’টি অর্থাৎ কুরায়েশ ও ইহূদী পক্ষকে দমন করার পর তৃতীয় শক্তি নাজদের বনু গাত্বফানের দিকে এই অভিযান প্রেরিত হয়। যারা প্রায়ই মদীনার উপকণ্ঠে ডাকাতি ও লুটতরাজ করত। এদের কোন স্থায়ী জনপদ বা দুর্গ ছিল না। এরা ছিল সুযোগসন্ধানী ডাকাত দল। তাই মক্কা ও খায়বরবাসীদের ন্যায় এদের দমন করা সহজ ছিল না। ফলে এদের বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসমূহ প্রতিহত করার জন্য অনুরূপ আকস্মিক হামলাসমূহ পরিচালনা করার প্রয়োজন ছিল। সেমতে খায়বর বিজয় সম্পন্ন করার পর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ৪০০ অথবা ৭০০ সাথী নিয়ে এদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। আনমার অথবা বনু গাত্বফানের ছা‘লাবাহ ও মুহারিব গোত্রের লোকেরা একত্রিত হয়ে যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নিচ্ছে মর্মে সংবাদ পেয়ে তিনি অগ্রসর হন এবং নাখল (نَخْل) নামক স্থানে তাদের মুখোমুখি হন। কিন্তু তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। আবু মূসা আশ‘আরী বলেন, আমাদের ৬ জনের জন্য মাত্র একটি উট ছিল, যা আমরা পালাক্রমে সওয়ার হচ্ছিলাম। এ কারণে আমাদের পা সমূহ আহত হয় ও আমার নখ ঝরে পড়ে। ফলে আমরা ছেঁড়া কাপড় দিয়ে পায়ে পট্টি বাঁধি। এ কারণ এ যুদ্ধের নাম হয় যাতুর রিক্বা‘ বা ছেঁড়া পট্টির যুদ্ধ।[3]

[1]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩১৩-১৪; আর-রাহীক্ব ৩৭৮ পৃঃ।
[2]. আর-রাহীক্ব ৩৮০ পৃঃ; বুখারী হা/৪২৩৮; মানছূরপুরী এটা ধরেননি।
[3]. বুখারী হা/৪১২৮; মুসলিম হা/১৮১৬।

খায়বরের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী

সরাসরি যুদ্ধ না হ’লেও এই অভিযানে অনেকগুলি ঘটনা ঘটে। যেমন (১) তরবারি গাছে ঝুলিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়ার সুযোগে জনৈক মুশরিক বেদুঈন গাওরাছ ইবনুল হারেছ(غَورَثُ بنُ الْحارِث) এসে রাসূল (ছাঃ)-এর তরবারি নিয়ে নেয়। অতঃপর তাঁকে হুমকি দিয়ে বলে,أَتَخَافُنِى؟ قَالَ: لاَ. قَالَ فَمَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّى؟ قَالَ: اللهُ ‘তুমি কি আমাকে ভয় কর? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না। সে বলল, বেশ কে এখন তোমাকে আমার থেকে রক্ষা করবে? রাসূল (ছাঃ) বলেন ‘আল্লাহ’। তখন ছাহাবীগণ তাকে ধমকালেন’।[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে, তখন তার হাত থেকে তরবারি পড়ে যায়। এ সময় রাসূল (ছাঃ) তরবারি উঠিয়ে তাকে বললেন, এখন তোমাকে কে রক্ষা করবে? সে বলল, كُنْ كَخَيْرِ آخِذٍ ‘আপনি শ্রেষ্ঠ ধারণকারীর মত হউন! রাসূল (ছাঃ) বললেন,أَتَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ؟ ‘তুমি কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই? সে বলল, না। আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না বা আপনার বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছে তাদের সহযোগিতাও করব না’। তখন উক্ত প্রতিশ্রুতির উপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাবী বলেন, অতঃপর সে তার কওমের নিকট গিয়ে বলে,قَدْ جِئْتُكُمْ مِنْ عِنْدِ خَيْرِ النَّاسِ ‘আমি তোমাদের নিকট এসেছি একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির নিকট থেকে’।[2] ওয়াক্বেদী ও ইবনু ইসহাক বলেন, পরে সে মুসলমান হয়ে যায় এবং তার মাধ্যমে বহু লোক ইসলাম কবুল করে। ওয়াক্বেদীর বর্ণনায় এসেছে যে, তার নাম ছিল দা‘ছূর (دَعْثُوْر) এবং সে তখনই ইসলাম কবুল করে। ইবনু হাজার বলেন, প্রকাশ্য বক্তব্যে বুঝা যায় যে, সেটি ছিল পৃথক যুদ্ধের পৃথক ঘটনা (ফাৎহুল বারী হা/৪১৩৪-এর আলোচনা)।

(২) এই দিন রাসূল (ছাঃ) এক দলের পর আরেক দলকে নিয়ে ‘ছালাতুল খাওফ’ আদায় করেন ফলে অন্যদের দু’রাক‘আত হয় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর চার রাক‘আত হয় (বুখারী হা/৪১৩৬)।

(৩) যুদ্ধ হ’তে ফেরার পথে বন্দীনী এক মুশরিক মহিলার স্বামী বদলা হিসাবে মুসলিম বাহিনীর রাতের বেলায় বিশ্রামের সুযোগে পাহারায় নিযুক্ত ছাহাবী ‘আববাদ বিন বিশরের(عَبَّادُ بنُ بِشْر) উপরে ছালাতরত অবস্থায় পরপর তিনটি তীর নিক্ষেপ করে তাঁকে মারাত্মক আহত করা সত্ত্বেও তিনি ছালাত ছেড়ে দেননি। পরে অন্য পাহারা ‘আম্মার বিন ইয়াসির যখন বলেন, আমাকে কেন জাগাননি? তখন তিনি বলেন,إنِّيْ كُنْتُ فِيْ سُوْرَةٍ فَكَرِهْتُ أَنْ اَقْطَعَهَا ‘আমি এমন একটি সূরা পাঠে মগ্ন ছিলাম, যা থেকে বিরত হওয়াটা আমি অপছন্দ করেছিলাম’।[3] সেটি ছিল সূরা ‘কাহফ’।[4]

এই অভিযানের ফলে বনু গাত্বফানের লোকেরা আর মাথা উঁচু করেনি। তারা ক্রমে ক্রমে সবাই ইসলাম কবুল করে। তাদের অনেকে মক্কা বিজয়ের অভিযানে ও তার পরে হোনায়েন যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সাথে যোগ দেয় এবং হোনায়েনের গণীমতের অংশ লাভ করে। মক্কা বিজয়ের পর তারা মদীনায় যাকাত পাঠাতে থাকে। এভাবে আহযাব যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তিনটি প্রধান শাখার সবগুলিই পদানত হয়। ফলে সর্বত্র শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করতে থাকে’ (আর-রাহীক্ব ৩৮১-৮২ পৃঃ)। এই অভিযানের ফলে শামের দিকে মদীনার প্রভাব বিস্তার সহজ হয়ে যায় (সীরাহ ছহীহাহ ২/৪৬২)।

[1]. বুখারী হা/৪১৩৬; মুসলিম হা/৮৪৩।
[2]. আহমাদ হা/১৪৯৭১; হাকেম হা/৪৩২২, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৫৩০৫।
[3]. ইবনু হিশাম ২/২০৮-০৯; যাদুল মা‘আদ ৩/২২৭-২৮; আর-রাহীক্ব ৩৮১-৮২ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/১৯৮, সনদ হাসান।
[4]. শামসুল হক আযীমাবাদী (১২৭৩-১৩২৯ হি./১৮৫৬-১৯১১ খৃ.) ‘আওনুল মা‘বূদ শরহ সুনান আবুদাঊদ (বৈরূত : ১৪১৫ হি.) হা/১৯৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য ১/২২৯ পৃঃ।

সারিইয়া গালিব বিন আব্দুল্লাহ লায়ছী

৭ম হিজরীর ছফর অথবা রবীউল আউয়াল মাস। কুদাইদ(قُدَيْد) অঞ্চলের বনু মুলাউওয়াহ(بَنُو الْمُلَوَّحِ) গোত্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক এই অভিযান প্রেরিত হয়। কেননা তারা ইতিপূর্বে বাশীর বিন সুওয়াইদ(بَشِير بن سُوَيد) এর সাথীদের হত্যা করেছিল। রাতেই হামলা করে তাদের কিছু লোককে হত্যা করা হয় ও গবাদিপশু নিয়ে সেনাদল ফিরে আসে। প্রতিপক্ষ বিরাট দল নিয়ে পশ্চাদ্ধাবন করলেও হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি নামায় তারা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে ও মুসলিম বাহিনী নিরাপদে ফিরে আসে।[1]

[1]. ইবনু সা‘দ ২/৯৪; ইবনু হিশাম ২/৬০৯; আর-রাহীক্ব ৩৮২ পৃঃ; আহমাদ হা/১৫৮৮২, সনদ যঈফ -আরনাউত্ব; বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুঅত ৪/২৯৯ পৃঃ।

সারিইয়া যায়েদ বিন হারেছাহ

৭ম হিজরী জুমাদাল আখেরাহ। রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসের নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রেরিত দূত ও পত্রবাহক দেহিইয়া কালবী সম্রাট প্রদত্ত উপঢৌকনাদি নিয়ে ফেরার পথে ওয়াদিল ক্বোরা-র হিসমা (حِسْمَى) নামক স্থানে পৌঁছলে জুযাম (جُذَام) গোত্রের কিছু লোক তার উপরে হামলা করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। মদীনায় ফিরে তিনি নিজ গৃহে প্রবেশের আগে রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে সব ঘটনা বর্ণনা করেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যায়েদ বিন হারেছাহর নেতৃত্বে ৫০০ সৈন্যের একটি দল হিসমার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। তারা জুযাম গোত্রের কিছু লোককে হত্যা করেন এবং ১০০০ উট, ৫০০০ ছাগল ও শ’খানেক নারী ও শিশুকে পাকড়াও করে মদীনায় ফিরে আসেন।

উক্ত গোত্রের সাথে যেহেতু পূর্বেই সন্ধিচুক্তি ছিল এবং অন্যতম গোত্রনেতা যায়েদ সহ কয়েকজন আগেই ইসলাম কবুল করেছিলেন ও তারা ডাকাত দলের বিরুদ্ধে দেহিইয়াকে সাহায্য করেছিলেন, সেহেতু যায়েদ বিন রেফা‘আহ জুযামী কালবিলম্ব না করে মদীনায় চলে আসেন ও রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে সবকিছু বর্ণনা করেন। তখন রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে গণীমতের সব মাল ফেরৎ দানের নির্দেশ দেন (আর-রাহীক্ব ৩৫৭ পৃঃ)।

সারিইয়া ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব

৭ম হিজরীর শা‘বান মাস। হাওয়াযেন গোত্রের বিরুদ্ধে তুরাবাহ (تُرَبَة) নামক স্থানে ৩০ জনের এই অভিযান প্রেরিত হয়। তারা রাতের বেলায় চলতেন ও দিনের বেলায় লুকাতেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ খবর জানতে পেরে ভয়ে পালিয়ে যায়। ওমর (রাঃ) সেখানে পৌঁছে কাউকে না পেয়ে ফিরে আসেন (আর-রাহীক্ব ৩৮২ পৃঃ)।

সারিইয়া আবুবকর ছিদ্দীক

৭ম হিজরীর শা‘বান মাস। নাজদের বনু কেলাব গোত্রের বিরুদ্ধে এই অভিযান প্রেরিত হয়। এরা বনু গাত্বফানের মুহারিব ও আনমার গোত্র সমূহের সহযোগী ছিল এবং মুসলমানদের উপরে হামলার প্রস্ত্ততি নিচ্ছিল। যুদ্ধে মুসলমানদের জয় হয়। শত্রুদের কিছু নিহত ও কিছু আহত হয়।[1]

[1]. ইবনু সা‘দ ২/৯০; মুবারকপুরী এটা ধরেননি। মানছুরপুরী ধরেছেন। তবে সাল-তারিখ ও সেনা সংখ্যা বলেননি’ (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/১৯৭)।

সারিইয়া বাশীর বিন সা‘দ

৭ম হিজরীর শা‘বান মাস। খায়বরের ফাদাক অঞ্চলের সীমান্তবর্তী বনু মুররাহ গোত্রের বিরুদ্ধে বাশীর বিন সা‘দ আনছারীর নেতৃত্বে ৩০ জনের এই সেনাদল প্রেরিত হয়। তিনি সেখানে পৌঁছে কাউকে না পেয়ে কিছু গবাদিপশু নিয়ে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা হন (আর-রাহীক্ব ৩৮৩ পৃঃ)। কিন্তু রাত্রি বেলায় শত্রুদল পশ্চাদ্ধাবন করে তাদের উপরে অতর্কিতে হামলা করে। এমন সময় তাদের তীর ফুরিয়ে যাওয়ায় সবাই শহীদ হয়ে যান। দলনেতা বাশীর বিন সা‘দ আহত অবস্থায় ফাদাকে নীত হন এবং এক ইহূদীর নিকটে অবস্থান করেন। পরে সুস্থ হয়ে মদীনায় ফিরে আসেন।[1] উল্লেখ্য যে, ফাদাকের ইহূদীদের সাথে ৭ম হিজরীর মুহাররম মাসে খায়বর যুদ্ধের সময় সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

[1]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩১৬; ইবনু সা‘দ ২/৯১।

সারিইয়া গালেব বিন আব্দুল্লাহ লায়ছী

৭ম হিজরীর রামাযান মাস। বনু ‘আওয়াল(بَنُو عَوَال) অথবা জুহায়না (جُهَينة) গোত্রের বিরুদ্ধে মাইফা‘আহ (مَيْفَعَةُ) অথবা হারাক্বাত (حَرَقات) নামক স্থানে ১৩০ জনের এই সেনাদলটি প্রেরিত হয়। যুদ্ধে তারা জয়ী হন এবং উট ও গবাদিপশু নিয়ে ফিরে আসেন।

এই যুদ্ধে তরুণ যোদ্ধা উসামা বিন যায়েদ (ঐ সময় তাঁর বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে) শত্রুপক্ষের জনৈক ব্যক্তিকে হত্যা করেন কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করার পরেও (তিনি ভেবেছিলেন যে, লোকটি ভয়ে কালেমা পাঠ করেছে)। একথা জানতে পেরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খুবই মর্মাহত হন এবং তাকে বলেন,أَفَلاَ شَقَقْتَ عَنْ قَلْبِهِ حَتَّى تَعْلَمَ أَقَالَهَا أَمْ لاَ؟ وَكَيْفَ تَصْنَعُ بِلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ إِذَا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ ‘সে সত্যভাবে বলেছে কি-না তা জানার জন্য তুমি কেন তার হৃদয় ফেঁড়ে দেখলে না? ক্বিয়ামতের দিন যখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এসে তোমার সামনে দাঁড়াবে, তখন তুমি কি করবে? একথা তিনি বারবার বলতে থাকেন (কঠিন পরিণতি বুঝানোর জন্য)’।[1]

[1]. ইবনু সা‘দ ২/৯১; আর-রাহীক্ব ৩৮৩ পৃঃ; মুসলিম হা/৯৬; আবুদাঊদ হা/২৬৪৩; বুখারী ফাৎহুল বারী হা/৬৮৭২-এর আলোচনা; মুসলিম হা/৯৭; মিশকাত হা/৩৪৫০ ‘ক্বিছাছ’ অধ্যায়; মানছূরপুরী এটাকে পৃথক ‘খারবাহ অভিযান’ (سرية خربة) বলেছেন (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/১৯৭)।

সারিইয়া আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা

৭ম হিজরীর শাওয়াল মাস।[1] ৩০ জন অশ্বারোহীর এই দলটি খায়বরে প্রেরিত হয় আসীর অথবা বাশীর বিন রেযাম (أَسِير أو بَشِير بن رِزَام)-কে দমন করার জন্য। কেননা তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বনু গাত্বফানকে একত্রিত করছিল। আসীরকে বলা হয় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তোমাকে খায়বরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করবেন’। তখন আসীর তার ত্রিশজন সঙ্গীসহ মুসলমানদের সাথে মদীনায় রওয়ানা হয়। কিন্তু পথিমধ্যে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে উভয় পক্ষে যুদ্ধ শুরু হয় এবং আসীর ও তার ৩০ জন সাথীর সকলে নিহত হয়।[2]

[1]. মানছূরপুরী এটি ৬ষ্ঠ হিজরীর শাওয়াল মাস বলেছেন (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ২/১৯৫)।
[2]. যাদুল মা‘আদ ৩/৩১৬; ইবনু সা‘দ ২/৭০-৭১; আর-রাহীক্ব ৩৮৩ পৃঃ।

সারিইয়া বাশীর বিন সা‘দ

৭ম হিজরীর শাওয়াল মাস। বনু গাত্বফান অথবা ফাযারাহ গোত্রের ইয়ামান ও জাবার(يَمَن وَجَبَار) এলাকায় ৩০০ সৈন্যের এই দলটি প্রেরিত হয়। কেননা শত্রুরা তখন মদীনার সীমান্তবর্তী অঞ্চল সমূহের উপরে হামলার জন্য বিরাট একটি দল জমা করেছিল। মুসলিম বাহিনীর আগমনের সংবাদ পেয়ে তাদের দল বিক্ষিপ্ত হয়ে পালিয়ে যায়। বহু গণীমত হস্তগত হয় ও দু’জনকে বন্দী করে মদীনায় আনা হ’লে তারা মুসলমান হয়ে যায়।[1]

[1]. আর-রাহীক্ব ৩৮৩ পৃঃ; যাদুল মা‘আদ ৩/৩২১-২২।

সারিইয়া আবু হাদরাদ আসলামী

৭ম হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাস, রাসূল (ছাঃ)-এর ক্বাযা ওমরাহ পালনের পূর্বে। মাত্র দু’জন সঙ্গী সহ আবু হাদরাদকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রেরণ করেন জুশাম বিন মু‘আবিয়া(جُشَمُ بنُ مُعاوِيَةَ) গোত্রের একটি দলের বিরুদ্ধে বনু গাত্বফানের গাবাহ (الغَابَة) নামক স্থানে। যেখানে তারা জমা হয়েছিল ক্বায়েস গোত্রের লোকদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শামিল করার জন্য। আবু হাদরাদ (রাঃ) সেখানে গিয়ে এমন এক যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করেন যে, শত্রুপক্ষ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় এবং বহু উট ও গবাদিপশু হস্তগত হয়।[1]

[1]. ইবনু হিশাম ২/৬২৯; যাদুল মা‘আদ ৩/৩২০; আর-রাহীক্ব ৩৮৩ পৃঃ।



প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর ৬৭ পর্বের জীবনীর সকল পর্ব এখান থেকে পড়ুন-

পর্ব-০১   পর্ব-০২   পর্ব-০৩   পর্ব-০৪   পর্ব-০৫   পর্ব-০৬   পর্ব-০৭   পর্ব-০৮   পর্ব-০৯   পর্ব-১০   পর্ব-১১   পর্ব-১২   পর্ব-১৩   পর্ব-১৪   পর্ব-১৫   পর্ব-১৬   পর্ব-১৭   পর্ব-১৮   পর্ব-১৯   পর্ব-২০   পর্ব-২১   পর্ব-২২   পর্ব-২৩   পর্ব-২৪   পর্ব-২৫   পর্ব-২৬   পর্ব-২৭   পর্ব-২৮   পর্ব-২৯   পর্ব-৩০    পর্ব-৩১   পর্ব-৩২   পর্ব-৩৩   পর্ব-৩৪   পর্ব-৩৫   পর্ব-৩৬   পর্ব-৩৭   পর্ব-৩৮   পর্ব-৩৯   পর্ব-৪০   পর্ব-৪১   পর্ব-৪২   পর্ব-৪৩   পর্ব-৪৪   পর্ব-৪৫   পর্ব-৪৬(১ম) পর্ব-৪৬(২য়)    পর্ব-৪৭   পর্ব-৪৮   পর্ব-৪৯   পর্ব-৫০   পর্ব-৫১   পর্ব-৫২   পর্ব-৫৩   পর্ব-৫৪   পর্ব-৫৫   পর্ব-৫৬   পর্ব-৫৭   পর্ব-৫৮   পর্ব-৫৯   পর্ব-৬০   পর্ব-৬১   পর্ব-৬২   পর্ব-৬৩   পর্ব-৬৪   পর্ব-৬৫   পর্ব-৬৬   পর্ব-৬৭  




**************************************
>>> Welcome, You are now on Mohammadia Foundation's Website. Please stay & Tune with us>>>


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোহাম্মদীয়া ফাউন্ডেশনের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url